প্রশ্নঃ নামায শুরু করতে নাকি সানা পড়তে হয়, রাসূল সাঃ সানা হিসেবে কি পাঠ করতেন? অনেকে "সুবহানাকা আল্লাহুম্মা" পাঠ করে এটিই কি সবসময় পাঠ করতে হবে?


উত্তরঃ বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। 

সানা পাঠ করা সূন্নাত। তাকবীরে তাহরীমা পাঠ করার পর রাসূল সাঃ কিছুক্ষণ সময় চুপ করে থাকতেন। তখন তিনি সানা পাঠ করতেন। তিনি সানা হিসেবে একেক সময় একেক দোয়া পাঠ করতেন। সেগুলো থেকে যে কোন একটি সানা হিসেবে পাঠ করলেই চলবে। দোয়াগুলো নিম্নে উল্লেখ করা হলোঃ

✅ আল্লাহুম্মা বাইদ বাইনী ওয়া বাইনা খাতা-ইয়া-য়া, কামা- বা-’আদ্তা বাইনাল মাশরিক্বী ওয়াল মাগরিবি, আল্লা-হুম্মা নাক্কিনী- মিন খাতা-ইয়া-য়া কামা- ইউনাক্কাছ্ ছাওবুল আবইয়াদু মিনাদ্দানাসি, আল্লা-হুম্মাগসিলনী- মিন খাতা-ইয়া-য়া বিল মা-য়ি, ওয়াছ্ছালজি, ওয়াল বারদি।

অর্থঃ হে আল্লাহ! তুমি আমাকে আমার পাপগুলো থেকে এত দূরে রাখ যেমন পূর্ব ও পশ্চিম পরস্পরকে পরস্পর থেকে দূরে রেখেছ। হে আল্লাহ্! তুমি আমাকে আমার পাপ হতে এমন ভাবে পরিষ্কার করে দাও, যেমন সাদা কাপড়কে ময়লা হতে পরিষ্কার করা হয়। হে আল্লাহ্! তুমি আমাকে আমার পাপ হতে (পবিত্র করার জন্য) পানি, বরফ ও শিশির দ্বারা ধুয়ে পরিষ্কার করে দাও। 

(বুখারি ও মুসলিম) 

✅ ইন্নী ওয়াজ্জাহতু ওয়াজহিয়্যা লিল্লাজি  ফাত্বারাস সামা-ওয়াতি ওয়াল আরদা হানিফাও ওয়ামা আনা মিনাল মুশরিকিন। ইন্না সালাতি ওয়ানুসুকি ওয়া মাহ ইয়া-ইয়া ওয়া মামাতি লিল্লাহি রব্বিল আলামিন, লা-শারীকালাহু ওয়া বিজালিকা উমিরতু ওয়া আনা মিনাল মুসলিমিন। আল্লাহুম্মা আনতাল মালিকু লা- ইলাহা ইল্লা আনতা, আনতা রাব্বি ওয়া আনা আবদুকা যালামতু নাফসি। ওয়া’তারাফতু বিযাম্বি, ফাগফিরলি জুনুবি জামিআ, আন্না লাহু ইয়াগফিরুয যুনুবা ইল্লা আনতা, ওয়াহদিনি লিইহসানিল আখলাক্বি, লাইয়াহদি লিইহসানিহা ইল্লা আনতা, ওয়াসরিফ আন্নি সাইয়্যিআহা, লা ইয়াসরিফু আন্নি সাইয়্যিআহা ইল্লা আনতা, লাব্বাইকা ওয়া সাঅ’দাইকা ওয়াল খাইরু কুল্লুহু ফি ইয়াদাইকা ওয়াশশাররু লাইসা ইলাইকা আনা বিকা, ওয়া ইলাইকা তাবারাকতা ওয়া তাআলাইতা আসতাগফিরুকা ওয়া আতুবু ইলাইকা। 

অর্থঃ আমি আমার মুখমণ্ডল ফিরাচ্ছি তাঁর দিকে, যিনি আসমান ও যমীনসমূহ সৃষ্টি করেছেন। আমি মুশরিকদের অর্ন্তভূক্ত নই। নিশ্চয়ই আমার নামাজ, আমার কুরবানি, আমার জীবন, আমার মৃত্যু, আল্লাহর জন্য। তাঁর কোন শরীক নেই।আর এ জন্যই আমি আদিষ্ট হয়েছি এবং আমি মুসলমানদের অন্তর্ভুক্ত। হে আল্লাহ! তুমিই বাদশাহ, তুমি ব্যতীত কোন মা‘বূদ নেই। তুমি আমার প্রভু আর আমি তোমার দাস। আমি আমার উপর যুলম করেছি। তাই আমি আমার অপরাধ স্বীকারকরছি। সুতরাং তুমি আমার সমস্ত অপরাধ ক্ষমা কর। নিশ্চয়ই তুমি ব্যতীত অন্য কেউ অপরাধ ক্ষমা করতে পারে না। আর আমাকে চালিত কর উত্তম চরিত্রের পথে, তুমি ব্যতীত অন্য কেউ উত্তম চরিত্রের পথে চালিত করতে পারে না। তুমি দূরে রাখ আমা হ’তে মন্দ আচরণকে, তুমি ব্যতীত অন্য কেউ আমাকে তোমার কাছ থেকে দূরে রাখতে পারে না। হে আল্লাহ! আমি উপস্থিত আছি তোমার নিকটে এবং প্রস্তুত আছি তোমার আদেশ পালনে। কল্যাণ সমূহ তোমার হাতে এবং অকল্যাণ তোমার উপর বর্তায় না। আমি তোমার সাহায্যেই প্রতিষ্ঠিত আছি এবং তোমারই নিকট প্রত্যাবর্তন করব। তুমি মঙ্গলময়, তুমি উচ্চ। আমি তোমার নিকটে ক্ষমা ভিক্ষা চাচ্ছি এবং তোমার দিকে ফিরে যাচ্ছি।

(মুসলিম, মিশকাত)

✅ সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা, ওয়া তাবারা কাসমুকা, ওয়া তাআলা জাদ্দুকা ওয়ালা ইলাহা গাইরুকা। 

অর্থঃ হে আল্লাহ! আমি তোমার পবিত্রতা বর্ণনা করছি। তুমি প্রশংসাময়, তোমার নাম বরকতময়, তোমার মর্যাদা অতি উচ্চে, আর তুমি ব্যতীত সত্যিকার কোনো মাবুদ নেই।

(তিরমিজি, আবু দাউদ মিশকাত)

উত্তর প্রদানেঃ
মোঃ আজিজুল হাকিম 
www.rahber1.blogspot.com